মাওলানা মুফতি মাহফুজুল হক দা.বা.। সকল পরিচয় ছাপিয়ে তিনি বাংলাদেশে ইসলামি আন্দোলনের একজন একনিষ্ঠ খাদেম। ইসলামি আন্দোলনের কর্মীদের জন্য আদর্শের প্রতীক। আন্দোলন, রাজনীতি, শিক্ষা সর্বক্ষেত্রে তাঁর সরব উপস্থিতি। পরিচয়টাও বেশ সমৃদ্ধ। শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ. এর সাহেবজাদা, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব। কর্মজীবনে ঢাকার জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার প্রিন্সিপাল।
হাদিসের আলো বিলান বাবার মতো দরদ নিয়েই। ইসলামি রাজনীতি করছেন সেই ছাত্রকাল থেকেই। শাইখুল হাদীসের আন্দোলন বিপ্লবের একজন উপস্থিতকর্মী। সেই জীবনে আছে কারাবরণের গৌরব। পুরানো অভিজ্ঞতা নিয়েই ইসলামি রাজনীতির মঞ্চে বক্তৃতা করেন উচ্চ সাহসে। একদিনের সন্ধ্যায় রাজনৈতিক জীবনের একাল-সেকাল, ঐক্য অনৈক্যসহ বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা হয় মাওলানা মাহফুজুল হকের সঙ্গে। আত-তাগলীবের পক্ষ থেকে সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন ওমর শাহ, জাহিদুজ্জামান ও আল আবিদ শাকির।
আত-তাগলীব: অতীত থেকে শুরু করি। সংগঠন করেন কখন থেকে? শুরুতে কোন সংগঠন করতেন?
মাহফুজুল হক:আমার ইসলামী আন্দোলন বা সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্টতা শুরু ছাত্রকালে একেবারে হেফজখানার শেষ পর্যায়ে এসে। ৮১ সালে। হাফেজ্জী হুজুর রহ. যখন নির্বাচন করেন। নির্বাচনকালীন সময় দেশের সমস্ত ওলামায়ে কেরাম ও আপামর দ্বীনদার সাধারণ জনগণ ইসলামী আন্দোলনের সাথে শরিক হয়। সেই সময়েই ইসলামী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ততার সুযোগ হয়। নির্বাচনকালীন সময় ময়দানমুখী কাজ হিসেবে পোষ্টার লাগানোরও সুযোগ হয়। সে সময় পোস্টার কিনে লাগাতে হতো। আমরা নির্বাচনী অফিস থেকে পোস্টার কিনে বিভিন্ন জায়গায় লাগিয়ে হাফেজ্জী হুজুরের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাই। এভাবেই ইসলামী আন্দোলনের সাথে প্রাথমিক সম্পৃক্ততা গড়ে ওঠে। হাফেজ্জী হুজুরের নির্বাচনে অংশগ্রহণ কোন সংগঠনের আওতায় ছিল না। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে যখন তিনি খেলাফত আন্দোলন গঠন করেন তখন প্রায় সকলেই এর সাথে সম্পৃক্ত হয়। আর এটা তেমন কোন মজবুত সংগঠন ছিল না। এটাকে বলা যায় সাময়িক জোয়ার। এতে ব্যাপকভাবে মানুষ সম্পৃক্ত হয়। এরপর এরশাদের স্বৈরশাসন শুরু হয়। স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে হাফেজ্জী হুজুর রহ. এর নেতৃত্বে আন্দোলন গড়ে ওঠে। সে আন্দোলনে ওলামায়ে কেরামের সাথে লালবাগ ও কামরাঙ্গীরচর সহ অনেক মাদ্রাসার ছাত্ররাও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখে। আমি তখন লালবাগের ছাত্র। বিভিন্ন আন্দোলনে শরিক হই। ১৯৮৪ বা ১৯৮৫ সালে আন্দোলনের মধ্য দিয়েই আমার ব্যক্তিজীবনেও কারাভোগের সৌভাগ্য হয়। প্রায় দুই মাস কারাভোগের পর মুক্তি পাই। পরবর্তীতে হাফেজ্জী হুজুর রহ. এর বয়স বাড়ার সাথে সাথে হুজুরের নেতৃতা¡ধীন খেলাফত আন্দোলনও দুর্বল হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে শাইখুল হাদিস রহ. ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস গঠন করলেন। আমি তখন জালালাইন বা মেশকাতের ছাত্র। শুরুতে তো সেভাবে ছাত্র সংগঠন ছিল না। তাই সম্পৃক্ততাও গড়ে ওঠেনি। এরপর দেওবন্দে পড়তে গেলাম। সেখান থেকে ফিরে এসে শিক্ষকতায় যোগ দিলাম। শিক্ষকতার প্রথম দিকেই বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মুহাম্মদপুর থানা শাখায় কাজ করার সুযোগ হয়।
আত-তাগলীব : জীবনের বড় একটা সময় রাজনৈতিক কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত আছেন। কোন বিষয়টি আপনাকে এত দীর্ঘ সময় রাজনীতির ময়দানে কাজ করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছে?
মাহফুজুল হক : আব্বাজান শাইখুল হাদিস রহ. সহ পরিবারের বড় যারা আছেন তারা সবাই ইসলামি আন্দোলনের ময়দানে কাজ করেছেন। বুঝ হওয়ার পর থেকে অনেক ওলামায়ে কেরামকে দেখেছি ইসলামি আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে। এর থেকেই প্রথম প্রেরণা। পরবর্তীতে একাডেমিক পড়ালেখার মাধ্যমেও এ বিষয়টা সুস্পস্ট হয়েছে যে, ইসলামের বিধি-বিধান ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠার জন্য মজবুত সংগঠন ছাড়া বাহ্যিক কোন বিকল্প নেই। এ বিষয়গুলোই দীর্ঘ সময় ইসলামী আন্দোলনের ময়দানে কাজ করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছে।
আত-তাগলীব : ছাত্র সংগঠন স¤পর্কে সমাজে নেতিবাচক একটি মনোভাব দেখা যায়। আপনি ছাত্র সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ততাকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
মাহফুজুল হক: ছাত্র সংগঠন স¤পর্কে সমাজে নেতিবাচক মনোভাব শুরু থেকেই ছিল। সে সময়তো নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠন ছিল না। ওলামায়ে কেরামের নেতৃত্বে ছাত্ররা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতো। এ বিষয়টাকেও অনেকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখতেন। তবে সে সময় নেতিবাচক মনোভাবটা কম ছিল। পরবর্তীতে ছাত্র সংগঠন একটি নিয়মতান্ত্রিক কাজ হয়ে দাঁড়ায়। এর পিছনে আলাদা সময় দিতে হয়। তাছাড়া আমাদের দেশের ছাত্র রাজনীতির যে বাস্তব চিত্র। এ কারণেও যারা ইলমে দ্বীন নিয়ে বেশি চিন্তা ফিকির করেন, এতে মনোনিবেশ করার প্রতি বেশি গুরুত্বারোপ করেন। তারা আরো বেশি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করতেন। তবে এ বিষয়ে সে সময়েও অনেকেই ইতিবাচক মনোভাব রাখতেন।
এ ব্যাপারে আমার ব্যক্তিগত মূল্যায়ন হলো, আমল শিখতে হলে যেমন ছাত্র জমানা থেকেই শিখতে হয়। দাওয়াতী মেজাজ গড়তে ছাত্র সময়েই কিছু সময় দিতে হয়। ঠিক তেমনি আসাতিযায়ে কেরাম ও মুরুব্বীগণের তত্ত্বাবধানে এবং পরামর্শক্রমে কেউ যদি সুন্দর সঠিক সংগঠন করতে চায়, তাহলে ব্যাপকভাবে না হলেও সীমিত পর্যায়ে সুশৃঙ্খলভাবে অংশগ্রহণ করা উচিৎ। এর মধ্য দিয়ে বেশ কিছু মানুষ ইসলামী আন্দোলনের জন্য উপযোগী হয়ে গড়ে উঠবে। ভবিষ্যত জীবনে ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারবে। নাহলে কর্মজীবনে নতুন করে সংগঠন আয়ত্ব করত: ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক সময় সম্ভবপর হয়ে ওঠে না পূর্বের অভিজ্ঞতার অভাবে।
আত-তাগলীব : আপনার এই যে দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, বহু ভাঙ্গা-গড়ার ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত এবং আজ এতোদূর আসা। এই পর্যায়ে এসে কি মনে করছেন; ইসলামি আন্দোলন নিয়ে যে স্বপ্ন আপনি দেখেছিলেন-সেটা পূরণ হয়েছে বা কতোটুকু পূরণ করতে পেরেছেন?
মাহফুজুল হক : ভাঙ্গা-গড়া হলেও ইসলামী আন্দোলনের বেশ কিছু কাজ সংগঠনগুলোর দ্বারা আদায় হচ্ছে। যেমন- ইসলাম বিরোধী কোন কিছু হলে এর প্রতিবাদ-প্রতিরোধ করা। এ কাজটা অরাজনৈতিক সংগঠন দ্বারা হলেও রাজনৈতিক সংগঠন দ্বারা হলে তা আলাদা গুরুত্ব রাখে। এ ক্ষেত্রে ইসলামী সংগঠনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ইসলামী আন্দোলনের তো চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে দেশে ও সারা পৃথিবীতে আল্লাহ প্রদত্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। তা অর্জিত হওয়ার জন্য বাহ্যিকভাবে প্রয়োজন সুন্দর, পরিকল্পিত ও ব্যাপক জনগোষ্ঠীর সংশ্লিষ্টতার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদী ধারাবাহিক কার্যক্রমের মজবুত সংগঠন। এ বিষয়গুলোর যথেষ্ট অভাব আমাদের সহীহ ধারার সংগঠনগুলোয় রয়েছে। তা কাটিয়ে ওঠলে এবং আল্লাহ তায়ালার ফয়সালা হলেই সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মনে করি।
আত-তাগলীব : ঐক্যের কোনো সম্ভাবনা আপনার চোখে পড়ছে কি না ?
মাহফুজুল হক : সুন্দর-স্বচ্ছ পরিকল্পনার আলোকে দীর্ঘ মেয়াদী কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে সহীহ ধারার মজবুত সংগঠন গড়ে ওঠলে ঐক্যবদ্ধ হওয়াটা অনেক সহজ হত বলে মনে হয়। যেমন খেলাফত আন্দোলন যখন গড়ে ওঠে। ওই সময় দীর্ঘ দিন থেকে চলে আসা জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, নেযামে ইসলাম সহ বিভিন্ন নামে কার্যক্রম পরিচালনাকারী সংগঠন খেলাফত আন্দোনের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। তাই আজও এর সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করি।
আত-তাগলীব : ঐক্যের ব্যাপারে যুব ও তরুণ সমাজের কি ভূমিকা হতে পারে বলে মনে করেন?
মাহফুজুল হক: ঐক্যের চিন্তা আসবে দ্বিতীয় পর্যায়ে। আমি মনে করি সর্বপ্রথম ব্যাপক জনসম্পৃক্ত মজবুত সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। দ্বিতীয়ত: সংগঠনের জনশক্তিকে উদার মনোভাবের অধিকারী হতে হবে। তৃতীয়ত: সংগঠন বড়, মজবুত হওয়ার পরও ছোটদেরকে তাচ্ছিল্য করা যাবে না। তাদেরকে মূল্যায়ন করে একসাথে কাজ করতে হবে। আর সর্বোপরি ইখলাসের সাথে দ্বীনি কাজ হিসেবেই করতে হবে। তাহলে আজকের তরুণ ও যুবকেরা আগামীতে ঐক্য গড়তে পারবে।
আত-তাগলীব : এ মুহূর্তে যদি আপনাকে একটি তৃতীয় শক্তির কাঠামো এবং বাস্তবায়নের রূপরেখা কল্পনা করতে বলা হয়, আপনি কীভাবে সেটা তৈরি করবেন?
মাহফুজুল হক : এ মুহূর্তে আমার কাছে তৃতীয় শক্তির সম্ভাবনা আছে বলে মনে হয় না। আরো সময় যেতে হবে। বাস্তবতা সামনে আসতে হবে। তারপর যদি সম্ভাবনা অনুভব করি।
আত-তাগলীব : দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে সর্বত্র ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনকে জঙ্গিবাদ হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। এটা কিভাবে মোকাবেলা করা সম্ভব?
মাহফুজুল হক: ইসলামের শত্রুরা যখন যেই কথা দিয়ে ইসলামী শক্তিকে দুর্বল করা যায় সে চেষ্টা করবেই। আমাদের আরো সচেতন হতে হবে। তারা যেন ঢালাওভাবে এ অপবাদ আমাদের উপর না দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে করণীয় হল, চিন্তাশীল, প্রতিনিধিত্বকারী ওলামায়ে কেরাম নিজেদের মধ্যে পরামর্শের ভিত্তিতে কর্মপন্থা নির্ধারণ করা। আর সে ক্ষেত্রেও কিছুটা কৌশলী ভূমিকা নেয়া।
আত-তাগলীব : বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে কিছু মানুষ কওমী মাদরাসা বন্ধের দাবি তুলছে। এ বিষয়টা আপনি কিভাবে দেখেন?
মাহফুজুল হক :বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে কওমী মাদরাসা বন্ধের দাবি উঠছে বিষয়টা এমন নয়। তাদের মূল টার্গেট হলো ইসলাম নির্মূল করা। এর জন্য কখনো তারা নাটক সাজায় আবার কখনো ষড়যন্ত্র পাকায়। অতপর একটি ইস্যু বানিয়ে কোন প্রতিষ্ঠানের উপর চাপানোর সুযোগ খোঁজে। দেখা যায় এর চেয়ে বড় অপরাধ করছে স্কুল কলেজ, ভার্সিটি পড়–য়া ছাত্ররা। তাদের অপরাধকে কেন্দ্র করে সেই প্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবিতো উঠে না! আর তাদের এই ষড়যন্ত্র ও প্রোপাগা-ার অন্যতম মাধ্যম পরিণত হয়েছে দেশের মিডিয়া।
আত-তাগলীব : ইসলামি দল হিসেবে ইসলামি যে ইস্যুগুলো আছে যেমন অর্থনীতি, জাকাতব্যবস্থা, গ্রামীণ উন্নয়ন, এসব বিষয়ে আন্দোলন করতে দেখা যাচ্ছে না কেন?
মাহফুজুল হক : আসলে এটা আমাদের ইসলামী সংগঠনগুলোর একটি বড় দুর্বলতা যে, ইসলাম বিরোধী কিছু কাজের মোকাবেলা ও প্রতিরোধের মধ্যেই নিজেদের সাংগঠনিক কার্যক্রম সীমাবদ্ধ করে রাখি। অথচ সার্বজনীন চিন্তা চেতনা নিয়ে কাজ করা উচিৎ। আর বাস্তবতা হলো এ সমস্ত কার্যক্রম করতে হলে যথেষ্ট শ্রম ও সময় দিতে হয়। এবং পরিকল্পনা করতে হবে। এ জন্য আমার মনে হয়, ইসলামী সংগঠনগুলোর এ সব বিষয় নিয়ে সুন্দর পরিকল্পনার আলোকে আগানো দরকার।
আত-তাগলীব: সৌদির সামরিক জোট মুসলিম বিশ্বের জন্য কতটুকু কল্যাণকর মনে করেন।
মাহফুজুল হক : এগুলোর মধ্যে বিশেষ কোন কল্যাণ আছে বলে মনে হয় না। বরং নিজেদের স্বার্থেরই একটি বহি:প্রকাশ।
আত-তাগলীব : যুব মজলিসের কাজকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন।
মাহফুজুল হক : ইসলামী সংগঠনের ময়দানে দীর্ঘ মেয়াদী সুন্দর পরিকল্পনার আলোকে নিয়মতান্ত্রিক সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা, সাংগঠনিক তৎপরতাকেই নিজেদের কাজ হিসেবে বেছে নেয়া এটার বড় অভাব। তাছাড়া কাজ কম করে প্রচারণা বেশি চালানো ও নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা ইত্যাদি বিষয় বড় রোগের আকার ধারণ করেছে। যুব মজলিসকে আমি বুঝার চেষ্টা করে যতটুকু মনে হয়েছে এখনও তাদের মধ্যে বিষয়গুলো তুলনামূলক কম। এটা একটা ভালো পলিসি।
দ্বিতীয়ত: আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় বলে মনে হয়, যুব মজলিস তাদের কর্মকা-ে ব্যক্তির আমলী ও ইখলাসের লাইনে উন্নতির গুরুত্ব দিচ্ছে। পাশাপাশি জ্ঞান সমৃদ্ধির জন্যও পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এবং এ সকল ক্ষেত্রে সরাসরি নিজেদের অংশগ্রহণের মানসিকতা তৈরি করছে। এ ধারাবাহিকতা যদি অব্যহত রাখা যায় তাহলে আশা করা যায়, আমরা ইসলামী সংগঠনের ময়দানে যে শূন্যতা অনুভব করছি আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহে যুব মজলিসের মাধ্যমে তা পূরণ হওয়ার পরিস্থিতি সামনে আসতে পারে।
আত-তাগলীব : যুব মজলিসের কার্যক্রম খেলাফত মজলিসের জন্য কতটুকু সহায়ক হবে বলে মনে করেন?
মাহফুজুল হক : আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেক সময় দেখি যে, একটা কথা শুনলে ভাল হলেও সেটাকে অনেক সময় মন্দ হিসেবে বিবেচনা করি, আবার মন্দটাকেও ভালো মনে করি। কিন্তু বিষয়টা আরো গভীরভাবে চিন্তা-ফিকির করার পর আসল অবস্থা সামনে স্পষ্ট হয়। যুব মজলিসের কার্যক্রম খেলাফত মজলিসের জন্য কতটুকু সহায়ক তা উপলব্ধি করার জন্য আরো সময় প্রয়োজন। এতটুকু সময়ের পর্যবেক্ষণে সহযোগী বলেই মনে হচ্ছে। এ ধারা অব্যহত রাখার জন্য যুব মজলিসের জনশক্তিকে ইতিবাচক মনের অধিকারী ও উদারমনা হতে হবে বলে আমি মনে করি।
আত-তাগলীব : যুব মজলিসের কর্মীদের জন্য বিশেষ কোন নসীহত।
মাহফুজুল হক: কথার মধ্য দিয়েই নসীহত এসে গেছে। তারপরেও বলব যেহেতু এটা একটি দ্বীনি সংগঠন, আর দ্বীনি যে কোন কাজের জন্য সবচেয়ে বড় বিষয় হল কবুলিয়্যাত। তাই যুব মজলিসের সকল কর্মীদের প্রতি আমার নসীহত তারা যেন এই কাজকে আল্লাহর নিকট কবুল করিয়ে নেন। এবং সকল ক্ষেত্রে ইখলাসের পরিচয় দেন।